পেইড ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার
তবে সকল সফটওয়্যার যে তুমি ফ্রি ডাউনলোড করতে পারবে এমনটাও নয়। বেশ কিছু প্রফেশনাল সফটওয়্যার (এবং সত্যি বলতে এগুলোই সেরা ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার!) তোমাকে কিনে ব্যবহার করতে হবে।
এডোবি সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সবচেয়ে অসাধারণ সফটওয়্যারগুলোর মধ্যে একটি হলো এডোবি প্রিমিয়ার প্রো। এই সফটওয়্যার দিয়ে প্রফেশনাল লেভেলের সকল কাজই তুমি করতে পারবে। এটি একই সাথে উইন্ডোজ এবং ম্যাকওএস সার্পোটেড।
১. সহজ ইন্টারফেস
২. বেশ কিছু টুল পাওয়া যায়, যা অন্য অনেক পেইড সফটওয়্যারে পাওয়া যাবে না
৩. অসংখ্য মাল্টিক্যাম এঙ্গেল ব্যবহার করা যায়
১. প্রফেশনাল নয় এমন মানুষদের জন্য এই সফটওয়্যার কিছুটা কঠিন হতে পারে
২. কিছু কিছু ফিচার ব্যবহার করার জন্য অন্য সফটওয়্যারের সাহায্য নিতে হয়, যেমন আফটার এফেক্ট কিংবা মিডিয়া এনকোডার।
৩. সাউন্ড এফেক্ট স্যাম্পল পাওয়া যায় না
২. CyberLink PowerDirector 365
এই সফটওয়্যার তুমি একবার কিনে সবসময় ব্যবহার করতে পারবে, পরে নতুন করে কোনো সাবক্রিপশন চার্জের প্রয়োজন হবে না। PCMag এডিটরস চয়েসের শীর্ষে থাকা এই সফটওয়্যার দিয়ে তুমি সামান্য ভিডিও ট্রিম থেকে শুরু করে প্রো লেভেলের ভিএফএক্সের কাজও করতে পারবে। এর ইন্টারফেসটাও নব্য এডিটরদের জন্য বেশ সহজ।
১. প্রজেক্ট খুব দ্রুত রেন্ডার করা যায়।
২. বেশ কিছু এফেক্ট এবং AI টুলস পাওয়া যায়
৩. মাল্টিক্যাম এবং মোশন ট্রাকিং করা যায়
৪. স্ক্রিন রেকর্ডিং এর সুবিধা আছে
১. অনেক বেশি ফিচার থাকায় প্রথম দিকে বুঝতে অসুবিধা হতে পারে
৩. Corel VideoStudio Ultimate
এই সফটওয়্যারটি অনেক বেশি পরিচিত এর স্টপ মোশন টুলের কারণে। যারা ভিডিও এডিট করার সফটওয়্যার অপারেট করে অভ্যস্ত অর্থাৎ প্রফেশনাল, কিংবা ইউটিউবার- তাদের জন্য তৈরি করা। সাইবারলিংকের মতো এই সফটওয়্যারও তুমি একবার কিনে পরে সাবস্ক্রিপশন ছাড়া ব্যবহার করতে পারবে।
১. এখানেও ফাস্ট রেন্ডারিং সুবিধা আছে
২. থ্রি সিক্সটি ডিগ্রি ভি আর, ফোর-কে আলট্রা এইচডি, এবং থ্রিডি মিডিয়া সাপোর্ট করে
৩. মাল্টিপয়েন্ট মোশন ট্র্যাকিং এর সুবিধা আছে, আছে স্টপ মোশন টুল
১. অডিও এডিটিং ফিচার খুব বেশি সমৃদ্ধ না
২. হাই ডিপিআই মনিটরে তেমন ভালো চলে না
প্রোফেশনাল এবং নন প্রোফেশনাল- উভয় শ্রেণির কাছে এই সফটওয়্যার জনপ্রিয়। এর জনপ্রিয়তার আরেকটি কারণ হলো, সাবস্ক্রিপশন ছাড়াই এর অধিকাংশ ফিচার উপলভ্য। ‘এভাটার’, ‘ডিউন’- এমন বেশ কিছু জনপ্রিয় সিনেমা এই এডিটর ব্যবহার করেই এডিট করা।
১. সুনির্দিষ্ট নিয়ন্ত্রণের জন্য বেশ কিছু এডিটিং টুল বিদ্যমান
২. গোছানো ও সহজবোধ্য ইন্টারফেস
৩. অন্যান্য সফটওয়্যারে মোশন গ্রাফিক এবং অডিও এডিটিং টুল না থাকলেও এখানে তা পাওয়া যায়
১. অনেকগুলো সিস্টেম রিসোর্সের প্রয়োজন
২. ইন্টারফেস সহজ হলেও এর অভ্যন্তরীণ বিষয়াদি কিছুটা জটিল, আর তাই শেখাটা কিছুটা সময়সাপেক্ষ।
৫. Movavi Video Editor Plus
শখের ভিডিও এডিটর এবং ইউটিউবারদের জন্য আদর্শ একটি পেইড সফটওয়্যার এটি। এখানে বেশ কিছু গুড-লুকিং এফেক্ট এবং ট্রানজিশন আছে, আছে সরাসরি ইউটিউব এবং ভিমোতে রেন্ডার করা ভিডিও আপ্লোডের অপশন। একবার কিনে বাকি জীবন ফ্রি ব্যবহার করা যায়, আর উইন্ডোজ এবং ম্যাকওএস- দু’টোর জন্যই সফটওয়্যারটি উপলভ্য।
১. ক্রোমা-কি ক্যাপিবিলিটি আছে
২. মোশন ট্র্যাকিং এবং পিকচার-ইন-পিকচার টুল আছে
৩. সাউন্ড সহ ট্রানজিশন পাওয়া যায়
১. রেন্ডারিং কিছুটা ধীর গতিতে হয়
আজকাল আমাদের স্মার্টফোনেই চটজলদি ভিডিও এডিট করা যায়! ডেস্কটপের জন্য অনেক ভালো ভালো ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার থাকলেও এন্ড্রয়েড ফোনের প্লে স্টোরে গেলে দেখা যাবে স্মার্টফোনের জন্য ভিডিও এডিটিং অ্যাপের কোনো কমতি নেই!
মোবাইলে ভিডিও এডিটিং করতে চাইলে তোমাকে সাহায্য করতে পারে FilmoraGo, এখানে আছে ভিডিও ট্রিম, কাট, থিমযুক্ত করা, সাউন্ড ট্র্যাক এড করার সুবিধা। পাশাপাশি নিজের সুবিধামত ফ্রেমিংও করা যাবে৷ তুমি চাইলেই ইন্সটাগ্রামের জন্য ১:১ আর ইউটিউবের জন্য ১৬:৯ ফ্রেমের ভিডিও বানাতে পারো। এছাড়াও এই অ্যাপসের মাধ্যমে তুমি রিভার্স ভিডিও বানাতে পারবে, ট্রানজিশন এড করতে পারবে, টেক্সট যুক্ত করতে পারবে, এমনকি স্লো মোশন ভিডিও-ও বানাতে পারবে খুব সহজেই!
এডোবির সব সফটওয়্যারগুলো আমরা সাধারণত ডেস্কটপে ব্যবহার করতে অভ্যস্ত। তবে স্মার্টফোনেও এডোবি প্রিমিয়ার ক্লিপ ইন্সটল করে ব্যবহার করতে পারবে৷ যদিও তা একটু বেশিই জায়গা দখল করে এবং মাঝে মাঝে ফোন হ্যাং হয়ে যায়। Adobe Premiere Clip এর বেস্ট ফিচার হচ্ছে এর অটোমেটিক ভিডিও ক্রিয়েশন ক্যাপাবিলিটি! এই অ্যাপ ব্যবহার করার সময় কোনো এডও দেখানো হয় না। ভিডিও কাট করা, ট্রিম করা, ট্রানজিশন থেকে শুরু করে অডিও, টেক্সট, ফিল্টার, এফেক্ট ইত্যাদি যোগ করা যায় এই অ্যাপটিতে।
এই অ্যাপটিকে বলা যায় ‘মোস্ট ট্যালেন্টেড অ্যাপ’! কেননা Video Show কিন্তু অনেকগুলো এওয়ার্ড পেয়েছে! তাই অনেকেই একে বেস্ট মোবাইল ভিডিও এডিটিং অ্যাপ হিসেবে চেনে। এর মাধ্যমে খুব সহজেই ভিডিও এডিট করা যায়, টেক্সট, এফেক্ট, সাউন্ড যুক্ত করা যায়, ডাব করা যায়। Video Show’তে তুমি পাবে কয়েক রকমের থিম। এছাড়া, কম্প্রেস করার মাধ্যমে ভিডিও’র সাইজ কমাতে ও বাড়াতেও পারবে!
৪. Power director Video Editor:
এই অ্যাপটি বেশ কার্যকর হলেও, টুলগুলোকে কন্ট্রোলে আনার জন্য একটু সময় লাগবে৷ কিন্তু একবার টুলস সম্পর্কে এক্সপার্ট হয়ে গেলে একদম প্রফেশনাল ভিডিও এডিটরদের মতন তুমি ভিডিও এডিট করা শুরু করে দিতে পারবে! আর সেটাও কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই! এখানে ৩০+ বিভিন্ন এফেক্ট ও ট্রানজিশন এফেক্ট আছে। এই অ্যাপের বেশিরভাগ ফিচারই ফ্রি। তবে আপগ্রেড করলে ওয়াটার মার্ক ও এড রিমুভ করার সুযোগ রয়েছে। ভিডিও 1080 ও 4K রেজুলেশনে এক্সট্র্যাক্ট করার ব্যবস্থাও রয়েছে।
প্রোফেশনাল স্টাইলের ভিডিও এডিট করার সফটওয়্যার হিসেবে এটি বেশ পরিচিত। এই অ্যাপটির ডিজাইন বেশ ভালো, সেই সাথে রয়েছে এর বেশ কিছু পাওয়ারফুল ফিচার! Drag-n-drop টেকনিকের মাধ্যমে বিভিন্ন মিডিয়াতে ফাইল ইম্পোর্ট করা যায়। সেই সাথে রয়েছে সাবটাইটেল যুক্ত করার সুবিধাও! লেয়ারের পর লেয়ার যুক্ত করে টেক্সট, গ্রাফিক্স, ইমেজ এড করা, পাশাপাশি কালার এডজাস্ট করা, ব্রাইটনেস বাড়ানো কমানো, স্পিড, টিউনিং-সব ধরনের সুবিধা এখানে পাওয়া যাবে৷
ভিডিও স্মার্টলি এডিট করার জন্য এটি হলো আরো একটা মজাদার অ্যাপ! এটি বেশ ফাস্ট এবং ফ্রি! নিজের পছন্দমতো বেশ কিছু ছবি বা ভিডিও ক্লিপ সিলেক্ট করো, এরপর বানিয়ে ফেলো নিজের স্টোরি! এতে আছে অটোমেটিক ভিডিও ক্রিয়েশন ক্যাপাবিলিটি, সেই সাথে ক্রপিং, কুইকলি সিংক, টেক্সট সবকিছুই যুক্ত করা সম্ভব। এছাড়াও রয়েছে মিউজিকের অটো সিংকিং ব্যবস্থা৷ আর এই অ্যাপে কোনো প্রকার এডও দেখানো হয় না!
অনেক দৃষ্টিনন্দন ভিডিও এডিটিং ফিচার আছে Viva Video-তে! এটি এমনভাবে ডিজাইন করা, যাতে যেকোনো এন্ড্রয়েড ব্যবহাকারী এটি ইউজ করতে পারবে। এই অ্যাপের মাধ্যমে প্রো লেভেলের ভিডিও তৈরি করা যায়৷ ১০০ এর চেয়েও বেশি স্টিকার ও ফিল্টার পাবে এইখানে! শুধু তাই না, এর মধ্যে রয়েছে এনিমেটেড ক্লিপ ও সাবটাইটেল যুক্ত করার হরেক রকম ডিজাইন! এই অ্যাপে আছে স্লো মোশন ভিডিও মেকার এবং স্লাইড শো মেকারও! অন্যান্য ভিডিও এডিটিং অ্যাপগুলোর মতন এখানেও আছে কাটিং, ভিডিও পোস্টিং, ক্রপিং, মার্জিং ক্লিপিংসহ আরো অনেক ফিচার!
Lapselt এর মাধ্যমে টাইম ল্যাপস ভিডিও খুব সহজেই বানানো যায়। সেই সাথে এক ক্লিকেই এটি শেয়ার করা যাবে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতেও! এছাড়াও রয়েছে হরেক রকম অডিও ট্র্যাক, এফেক্ট ও ফিল্টার! অ্যাপটি প্লে স্টোরে বিনামূল্যেই পাওয়া যাবে৷
ইন্সটাগ্রামে ভিডিও কিংবা স্টোরি আপলোড দেওয়ার জন্য আরেকটি ভিডিও এডিটিং অ্যাপ হলো এই Cute Cut! ভিডিওর মধ্যে চাইলে ছবিও আঁকতে পারবে, এছাড়া নিজের ড্রয়িং, নানানরকম শেপ, টেক্সটও যুক্ত করতে পারবে৷ Cute Cut বিনামূল্যেই প্লে স্টোর থেকে নামাতে পারবে।
সাধারণত ছবি এডিট করার জন্য এই অ্যাপ ব্যবহার করা হলেও, ভিডিও এডিটিংয়ের জন্যেও InShot বেশ উপকারি একটি অ্যাপ। ব্যবহার করা বেশ সোজা৷ ভয়েস ওভার, মিউজিক, ন্যারেশন, ইমোজি, ওভারলে-সহ আরো হরেক রকম সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাবে এখানে!
প্রফেশনালদের মতো কিভাবে ভিডিও এডিটিং করা যায়, তা নিয়েই এখন বলবো। ইন্টারনেটে তুমি অনেক ভিডিও এডিটিং কোর্স তুমি খুঁজে পাবে, যার কয়েকটি তুমি ফ্রিতে পেলেও, বেশ কিছু কোর্স তোমাকে কিনে নিতে হবে। এমন কিছু কোর্সের কথাই বলবো এখন। তবে আগেই বলে রাখি, এখানে উল্ল্যেখ করা সবগুলো কোর্সই পেইড কোর্স, অর্থাৎ তোমাকে পয়সা খরচ করে এগুলো কিনতে হবে।